রাজস্ব নীতি ও ভারতবর্ষ

 Indian Economy: দেশের রাজস্ব নীতি আটকে এক বিশেষ চক্রে, মুক্তি আদৌ সম্ভব?

টি এন নাইনান
১৭ জুলাই ২০২১ ১৭:৩৮

গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।

এই বিজ্ঞাপনের পরে আরও খবর

পেট্রল ও ডিজেলের দাম নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশের আবহাওয়া যথেষ্ট উত্তপ্ত। প্রাথমিক ভাবে এর পিছনে রয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তরফে জ্বালানি তেলের খুচরো মূল্যের উপর ৬০ শতাংশ করবৃদ্ধি। মুদ্রাস্ফীতির সামঞ্জস্য রাখার শর্তেও জ্বালানি তেলের দাম এতটা বৃদ্ধি পায়নি কখনও। ১৯৮০ সালে যখন ওপেক-নির্ধারিত দ্বিতীয় মূল্যবৃদ্ধির কালে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৩০ আমেরিকান ডলার (এখনকার নিরিখে প্রায় ১০০ আমেরিকান ডলার) বৃদ্ধি পেয়েছিল, ভারতে সেই বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল লিটার প্রতি ৫ টাকা ১০ পয়সা (এখনকার নিরিখে লিটার প্রতি প্রায় ৮০ টাকা)। ২০১৪ সালেও অন্যথা ঘটেনি। আন্তর্জাতিক স্তরে তেলের দাম ব্যারেল পিছু ১০০ আমেরিকান ডলার বাড়লে ভারতে পেট্রলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৭০ টাকার সামান্য বেশি। কিন্তু আজ পুরো ব্যাপারটাই উল্টে গিয়েছে। পেট্রলের উপরে শুল্ক বেড়েছে লিটার প্রতি প্রায় তিন গুণ। ডিজেলের ক্ষেত্রে প্রায় ছয় গুণ।

এতে লাভ হয়েছে সরকারের। পেট্রোপণ্য থেকে সংগৃহীত কেন্দ্রীয় রাজস্ব গত সাত বছরে প্রায় পাঁচ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এই ধরনের একতরফা রাজস্ব-নির্ভরতার কিছু বিপদ রয়েছে। এতে মূল্যবৃদ্ধি সবার আগে চোখে পড়ে। তা থেকে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এবং প্রায় ১৫০ শতাংশ করবৃদ্ধির সমর্থনে সরকারের বিশেষ কিছুই বলার থাকে না। সরকারের তরফে কেবল এটুকুই বলা হয় যে, করভার কমানোর কোনও রাস্তাই তার সামনে নেই। কারণ, তা হলে অতিপ্রয়োজনীয় রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হবে। এই যুক্তিটিই অনিবার্য। তা সত্ত্বেও সরকার একটি আংশিক সমাধানের চেষ্টা করে। তা হল জ্বালানির লিটার প্রতি করভার আটকানোর চেষ্টা। এর দ্বারা তেলের দামের উত্তরোত্তর বৃদ্ধি থেকে লভ্য করের দ্রুত পতনকে অন্তত আটকানো যায়।

Advertisement

কিন্তু একটা বড় সমস্যাও রয়েছে। এ বছরের বাজেটে মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ৯.৯ শতাংশ কেন্দ্রীয় রাজস্ব বৃদ্ধির সম্ভাবনা খুলে রাখা হয়েছে। মোদী সরকার আসার আগে এই পরিমাণ ছিল ১০.১ শতাংশ। পেট্রোলিয়াম থেকে রাজস্ব বৃদ্ধি তুলে নিলে জিডিপি-র নিরিখে রাজস্বের সার্বিক পতন ঘটবে। এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, এর মধ্যে করোনা অতিমারির প্রভাব দেখা যাচ্ছে। এটা দুর্যোগের সপ্তম মাস চলছে। সুতরাং, গত বছর পণ্য ও পরিষেবা থেকে পাওয়া রাজস্ব ২০১৮-’১৯ সালের থেকেও কম এসেছে। এ বছর আরও খানিকটা উন্নতি আশা করা যাচ্ছে। কারণ, মে মাসের লকডাউন রাজস্বের উপর ততটা প্রভাব ফেলেনি, যতটা ২০২০-র লকডাউনের সময় ফেলতে পেরেছিল। কিন্তু এতেও সমস্যা রয়েছে। এখন থেকে এক বছর রাজ্যগুলি তাদের বাৎসরিক জিএসটি-র ১৪ শতাংশ পঞ্চবার্ষিক বৃদ্ধির নিশ্চয়তা থেকে বঞ্চিত হবে। তখনকার আর এখনকার মধ্যে গুরুতর কোনও পদক্ষেপ করার প্রয়োজন ছিল। বৃদ্ধির হারকে যুক্তিসঙ্গত করার দরকার ছিল এবং জিএসটি-র গড় হারকে চলতি মন্দাবস্থা থেকে উত্তরণের আগেই কাঙ্ক্ষিত স্তরে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এই ব্যাপারটাকে বাধ্যতামূলক বা কঠোর ভাবে বলবৎ করতে পারলে কিছু সদর্থক ফল দেখা যেত।

Comments

Popular posts from this blog

Whenever a country turns towords great depression ineconomic front it's obviously brings the questions of races in mainstream Political stage!

The Economist explain: What is sharia?